ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে আরো ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত

নতুন পিসিআর মেশিন দিচ্ছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা
কক্সবাজার প্রতিনিধি :: কক্সবাজারে আরো ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের আইইডিসিআর ল্যাবে ৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষার পর ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। নতুন করে শনাক্ত এ করোনারোগীর মধ্যে ২ জন উখিয়ার এবং একজন চকরিয়ার। তাদের মধ্যে উখিয়ার দুই রোগীকে রামুর আইসোসেলশন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে কক্সবাজারে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৫ জনে। তাদের মধ্যে এক রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকী ২৪ জনের মধ্যে ১৭ জন রামুর আইসোসেশন সেন্টারে, ৩ জন মহেশখালীতে ও ৪ জন নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান।
তিনি জানান, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এক চিকিৎসকও রয়েছেন, যিনি টেকনাফে নিজ বাসার কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এছাড়া চকরিয়ার ২ জন রোগীও নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সিভিল সার্জন জানান, কক্সবাজার জেলার করোনা রোগীর মধ্যে মহেশখালীতে ১০ জন, টেকনাফে ৪ জন, উখিয়ায় ৪ জন, চকরিয়ায় ৩ জন, সদর উপজেলায় ২ জন এবং রামুতে ১ জন। জেলার কুতুবদিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় এখনো কোন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়নি।
এদিকে মহেশখালীর করোনা আক্রান্ত ৩ রোগীর ২য় বারের টেস্টের রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ পাওয়া গেছে। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে গত ২৭ এপ্রিল তাদের নমুনা দ্বিতীয়বারের জন্য টেস্টে পাঠানো হয়। গত ১৯ এপ্রিল প্রথম টেস্টে তাদের শরীরে করোনা ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছিলো বলে জানান মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
তিনি জানান, নিয়মানুযায়ী ৩০ এপ্রিল (আজ) আবারও তাদের নমুনা সংগ্রহ করে তৃতীয়বার টেস্টের জন্য পাঠানো হবে। আর তৃতীয়বারের টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ হলেই তাদের হাসপাতাল থেকে রিলিজ করা হবে।
রামুস্থ জেলা আইসোলেশন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক ডা. আলী আহসান জানান, বুধবার নতুন করে শনাক্ত হওয়া ৩ রোগীর মধ্যে উখিয়ার ২ জনকে এ হাসপাতালে আনা হয়েছে। এনিয়ে এখানে মোট চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৭ জন। এখানে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে দুই জনের পুনঃটেস্টেও করোনা পজেটিভ এসেছে। তাদের একজন শহরের টেকপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী এবং অপরজন টেকনাফের। সম্প্রতি তারা নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে ফেরেন।
কক্সবাজারে প্রথম করোনারোগী ধরা পড়ে গত ২৪ মার্চ। ৭৮ বছর বয়স্ক এ মহিলা রোগী ১৮ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে তাকে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে তার পুনঃটেস্টে করোনা নেগেটিভ আসে। তিনি চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ৫ এপ্রিল থেকে চকরিয়ার নিজ বাড়িতে রয়েছেন।
কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. অনুপম বড়ুয়া জানান, গত ২ এপ্রিল কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের আইইডিসিআর ল্যাবে করোনা টেস্ট শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১১২৬ জনের স্যাম্পল টেস্ট করা হয়েছে। তারমধ্যে ২৫ জনের রিপোর্ট পজেটিভ ও বাকী ১১০১ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ। এদের মধ্যে ২৩ জন কক্সবাজার জেলার এবং বাকী ২ জন পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা।
নতুন পিসিআর মেশিন আসছে :
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে করোনা ভাইরাস জীবাণু শনাক্ত করতে আরো একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পিসিআর মেশিনটি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করছে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) সহায়তায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় পিসিআর মেশিনটি স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানান অধ্যক্ষ অনুপম বড়ুয়া। আগামী ১৩ মে’র মধ্যে পিসিআর মেশিনটি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
অধ্যক্ষ বলেন, মেশিনটি পৌঁছালেই পরবর্তী ৪/৫ দিনের মধ্যে সেটি স্থাপন করে মান পরীক্ষা শুরু হবে। আর দুইদিনের মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই মেশিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। মেশিনটি চালানোর জন্য চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, ল্যাব কর্মী সহ প্রয়োজনীয় জনবল সংস্থানের ব্যবস্থা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

পাঠকের মতামত: